Coach Kanchon

May 16, 20194 min

সফল উদ্যোক্তা হওয়ার ৭ উপায়

By Shadat Hridoy


 

সফল উদ্যোক্তা হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা আমরা নিজেরাই। কারণ আমাদের ভেতর আত্নবিশ্বাস এর খুব বেশি অভাব।

আমরা সারাক্ষণ নিজেকে বলি, এটা আমি পারবো না, এটা আমাকে দিয়ে হবে না, এ কাজ করলে মানুষ কি বলবে, এটা আমি কিভাবে করবো, আমি কি সফল হবো? এরকম নানা নেতিবাচক কথা আমরা নিজের সাথে বলতে থাকি। আমাদের মনের অজান্তেই আমাদের সাবকনশাস মাইন্ড এইসব কথাগুলো প্রোগ্রামিং করে ফেলে।

Life is too short to spend in negativity. So I have made a conscious effort to not be where I don't want to be.

Author unknown  

তাই উদ্যোক্তা হতে হলে সবসময় ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করুন। আজকে আলোচনা করবো এমন ৭ টি আইডিয়া নিয়ে যা আপনাকে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে রাখবেঃ
 

লক্ষ্য নির্ধারণ করাঃ-
 

ব্যবসা শুরু করার আগে নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন কেন আমি ব্যবসা শুরু করছি? নিজের কোম্পানি কে ৫ বছর পর আমি কোথায় দেখতে চাই। ৫ বছর পর আমি কত টাকার মালিক হতে চাই। এগুলো সব একটি কাগজে লিখুন। মনে রাখবেন আপনার লক্ষ্য এর সাথে যতক্ষণ পর্যন্ত ডেডলাইন থাকবে না ততক্ষণ পর্যন্ত এটা লক্ষ্য বলে বিবেচিত হবেনা।

আপনার লক্ষ্য লিখার একটি ফরম্যাট-

১)আমি ২০২৫ সালে একজন সফল উদ্যোক্তা হবো

২)২০২৫ সালের ভিতর আমি ১ কোটি টাকার মালিক হবো
 
৩)২০২৫ সালের ভিতর আমি ৫০ জন মানুষ এর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবো।
 

এভাবে আপনার লক্ষ্য লিখবেন এবং প্রতিদিন ২ বার তা জোরে পড়বেন। ২১ দিন এগুলো পড়লে তা আপনার অবচেতন মন প্রোগ্রাম করবে। এবং এগুলো অর্জনের জন্য আপনার অবচেতন মন আপনাকে নতুন নতুন পথ দেখাবে। মনে রাখবেন আপনার স্বপ্ন কে সত্যি করার ক্ষমতা আপনার অবচেতন মন এর ভিতর আছে।

If you want to be happy, set a goal that commands your thoughts, liberates your energy and inspires your hopes.” —Andrew Carnegie
 

কমিটমেন্টঃ
 

যে কোন ব্যবসা সফল হওয়ার মূল পয়েন্ট হচ্ছে কমিটমেন্ট ঠিক রাখা এবং পজিটিভ ফিডব্যাক । পজিটিভ ফিডব্যাক আপনাকে সবসময় রিপিট কাস্টমার দিবে। পজিটিভ ফিডব্যাক আপনি তখন ই পাবেন যখন আপনি আপনার কমিটমেন্ট ঠিক রাখবেন এবং পণ্য কোয়ালিটি বাড়াবেন। তাই সবসময় কমিটমেন্ট ঠিক রাখার চেষ্টা করুন।

The only limit to your impact is your imagination and commitment.” Tony Robbins

সমস্যা সমাধানঃ
 

আমাদের দেশে সমস্যার অভাব নেই। আপনি যদি একজন সফল উদ্যোক্তা হতে চান তাহলে সবার প্রথমে সমাজের যে কোন একটি সমস্যা সমাধান নিয়ে আপনাকে বিজনেস প্লানিং দাঁড় করাতে হবে।  Amazon এর কোন পণ্য নেই। তারা শুধুমাত্র সারা পৃথিবীতে কেঁনাবেঁচা কে সহজ করে দিয়েছে।তাই আজকে তারা বিলিয়নিয়ার কোম্পানির মালিক। পাঠাও আমাদের দেশে শুধু চলাচল এর পথ কে সহজ করে দিয়েছে। তাই আজকে তারা কয়েকশ কোটি টাকার মালিক।পৃথিবীতে সমস্যা আছে বলে  Amazon, Alibaba দের জন্ম হয়েছে। তাই সবসময় চিন্তা করুন কিভাবে একটা সমস্যা সমাধান করা যায়।

Focus on the solution, not on the problem.” Jim Rohn
 

বই পড়ুনঃ
 

উদ্যোক্তা জার্নি তে যে কি পরিমাণ ব্রেইন ইউজ করতে হয় সেটা সফল উদ্যোক্তাদের দিকে তাকালে বুঝা যায়। আপনি যদি আজকে থেকে ১০ বছর পর বাজারে কোন প্রোডাক্ট টি চলবে আর কোন টি চলবে না এটা যদি এখন উপলব্ধি করতে না পারেন তাহলে আপনি বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবেন না। তাই সবসময় বই পড়ুন। কারণ যারা বই পড়ে তারা ভবিষ্যৎ কে কল্পনা চোখ দিয়ে উপলব্ধি করতে পারে। তাছাড়া বই পড়লে আপনার ব্রেইন চর্চা হবে। যার ফলে আপনার মাথায় নতুন নতুন সৃজনশীল আইডিয়া আসবে। এ পৃথিবীতে সকল বিলিয়নিয়ার দের একটা কমন অভ্যাস হচ্ছে তারা অনেক বেশি বই পড়ে।

The more that you read, the more things you will know. The more that you learn, the more places you’ll go.” – Dr. Seu

বড় বড় স্বপ্ন দেখুনঃ
 

আজকে থেকে অনেক বছর আগে যদি কেউ প্লেন উড়ানোর কথা চিন্তা করতো তাহলে হয়তো মানুষ তাকে পাগল বলতো নাহলে তাকে হত্যা করার চেষ্টা করছে। কিন্ত আজকে সত্যি পৃথিবীতে প্লেন উড়ছে। তাই আজকে যদি আপনি আরো বড় কোন কিছু করার চিন্তাও করেন তাহলে কিছুই হবে না। সবসময় বড় বড় স্বপ্ন দেখুন। মানুষ কি বলবে এটা নিয়ে মোটেও ভয় পাবেন না। প্রথমে মানুষ আপনার আইডিয়া দেখে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করবে। তারপর আপনার কাজ দেখে তারা হাঁসবে। তারপর একদিন তারাই আপনার সফলতা উদযাপন করবে।

All our dreams can come true, if we have the courage to pursue them.”—Walt Disney.

ভালোবাসার কাজটি করুনঃ
 

আপনি যে কাজ টি করুন না কেন আপনাকে অবশ্যই সেই কাজ টি কে ভালোবাসতে হবে। নাহলে একসময় সবকিছু অসহ্য মনে হবে আপনার কাছে। আপনি হাল ছেড়ে  দিতে চাইবেন  সব কাজ থেকে।অন্যদিকে, যদি আপনি কাজ টি কে ভালোবাসেন তাহলে যখন আপনি কাজের ভিতর থাকবেন না তখনও আপনি কাজ টি নিয়ে ভাববেন। ভালোবাসা এমন একটি ব্যপার যা আমাদের কে চম্বুকের মত আকর্ষণ করে।

the only way to do great work is to love what you do.”
 
Steve Jobs

লেগে থাকাঃ
 

আপনি চাকরি করলে প্রতি মাসে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ বেতন পাবেন। কিন্তু ব্যবসা শুরু করলে ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ টি বছর খুব বেশি একটা প্রফিট পাবেন না। এই সহজ সত্যি টি মেনে  নিতে পারলে আপনি ব্যবসা করুন না হলে চাকরি করুন। ম্যালকম গ্লাডওয়েল তার বই OUtliers এ বলেছেন যে কোন একটা কাজে সফল হতে হলে কমপক্ষে ১০ হাজার ঘন্টা সেই কাজের পিছনে লেগে থাকতে হয়। তাই একটা কোম্পানি সফল করতে হলে আপনাকে মোটামুটি ১০ হাজার ঘন্টা সময় লেগে থাকতে হবে।

We can do anything we want to if we stick to it long enough..

Helen keller
 

পরিশেষে বলবো, সততা, লেগে থাকা, আত্নবিশ্বাস, প্যাশন থাকলে আপনি অবশ্যই একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারবেন। উদ্যোক্তা হতে হলে সবচেয়ে যেটা জরুরি সেটা হচ্ছে শুরু করা। একবারে ছোট থেকে শুরু করুন পারলে।তবে আপনাকে শুরু করতেই হবে। নিজের চারপাশের ভয় এবং জড়তা দূর করার জন্য এর চেয়ে ভালো উপায় নেই।

    2850
    5