By Mohammad Zahid Hassan
আমার দাদার অনেক বড় জমিদারি ছিল, আজ যারা ধনী তাদের একসময় ভাত জুটত না। আমার দাদার/বাবার বাড়িতে ওরা (আজকে সমৃদ্ধশালী) কামলা (দিনমজুর) দিত।
এই দোকান/জমি/বাড়ি/কারখানাটি আমার বাবাকে মাত্র ৫০০/১০০০ টাকায় দিতে চাইছিল তবুও সে কিনে নাই।
ইশ্! তখন যদি নিত, আজ খুব ভালো থাকতাম!
আফসোসের চাদরে মোড়ানো হৃদয়ের পাজড় ভাঙ্গা এসব হাহাকারের মূল কারণ হলো "সময়ের চাহিদার সাথে সাথে নিজেকে পরিবর্তন করতে না পারা।" কারন আমাদের সমৃদ্ধি নির্ভর করে সুযোগ বুঝা এবং তা কাজে লাগানোর দক্ষতার উপর।বিজ্ঞানের ভাষায় অভিযোজন।
এক্ষেত্রে সমস্যা হলো আমরা অনেকেই পরিবর্তিত হতে চাই না। যেমন উপমহাদেশে ইংরেজি ভাষা চালু হবার সময়েও দেখা যায় প্রায় ১০০ বছর লেগে ছিল ভাষা হিসেবে ইংরেজিকে গ্রহণ করতে। পুরনোকে আঁকড়ে ধরে রাখতে রাখতে নতুন এসে এমন এক ধাক্কা দেয় তাতে পৃথিবীতে অস্তিত্বই টিকিয়ে রাখা দায় হয়ে পড়ে। একদিন কথা হচ্ছিল অতীত আঁকড়ে ধরে রাখব কমিটির সভাপতির সাথে, খুব গৌরব করে উনি বললেন "ওরা (বর্তমানে সমৃদ্ধশালী) তো আমার বাবার বাড়িতে ফেন (ভাতের মাড়) খেয়ে মানুষ"। আমি বললাম আপনার বাবার বাড়ির ফেন খেয়ে ওরা যদি আজ গাড়ি বাড়ির মালিক হতে পারে তাহলে ভাত খেয়ে আপনি কি করেছেন? এরপর ভদ্রলোক শুধু নিরব কবিদের সারি দীর্ঘ করেছেন।
আজকের কম্পিউটার, ফেসবুক, টুইটার, ইমেইল, ইউটিউব, সাবমেরিন, গ্রেডিং সিস্টেম, মোবাইল ব্যাংকিং, এন্ড্রয়েড মোবাইল, হালের উবার, পাঠাও, সহজের মত সার্ভিস গুলো সময়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে (একই প্রয়োজন ভিন্ন ভাবে করছে পূরণ) প্রতিষ্ঠিত হয়ে পুরনোর কফিনে নতুনের বিজয় নিশান উড়িয়ে দিয়েছে।
আগামী ১০ বছরের মধ্যে বর্তমানে চাহিদার তুঙ্গে থাকা পেশাগুলোর (৭০% - ৮০%) সলিল সমাধি হবে। এমন এমন কাজ/পেশা আসবে যেগুলো আজ হয়তোবা কল্পনাতেও নেই। চালক বিহীন গাড়ি, ডাক্তার ছাড়া অপারেশন, অবসরে মঙ্গলের বুকে বিচরণ হবে নিত্য দিনের ঘটনা। সেদিন বেশি দূরে নয় যেদিন ঘরে বাইরে কাজ করবে রোবট, মানুষ শুধু পরিকল্পনা আর পরিচালনা করবে।
পরিবর্তনের ঢেউ উঠেছে, ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়, আছড়ে পড়বে আপনার সাজানো বাগানে। কতটুকু প্রস্তুত আপনি? আপনার পরবর্তী প্রজন্ম? কতটুকু নিরাপদ! পরিবর্তন হবেন নাকি সারাজীবন একটি গাড়ির মালিক হওয়াকেই সফলতার চাবিকাঠি ভাববেন? যেখানে উবার কোন গাড়ির মালিক না হয়েও হাজার হাজার গাড়ির মালিকের চেয়েও বেশি আয় করছে প্রতিদিন। চোখ মেলে তাকান, চারদিক দেখুন ভালকরে, এমন শত শত উদাহরণ ধরা পড়বে আপনার চোখে।
পরিশেষে, যারা ভবিষ্যতের প্রস্তুতি নেয়, তাদের কাছে পৃথিবী সহজ হয়েই আসে। তাই ভীত না হয়ে সাহসের সাথে নিজেকে প্রস্তুত করতে এখনই কাজে নেমে পড়ুন। একটু ভিন্ন ভাবে চিন্তা করুন, লাগেজের নিচে চাকা লাগিয়েওতো কেউ না কেউ কোটি টাকা আয় করেছে।
আপনিও ভাবুন,খুজুন, অবশ্যই পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ। সম্পদের পুরনো ধ্যান ধারণা বাদ দিয়ে ডিজিটাল সম্পত্তি গড়ুন। ভালো থাকুন, ভালো রাখুন। মনে রাখবেন......
"বীর ভোগ্য বসুন্ধরা
ভালো লাগলো পড়ে