top of page
Writer's pictureCoach Kanchon

কোচ কাঞ্চন এর গল্প।

Updated: Dec 22, 2023

কোচ কাঞ্চন একজন লেখক, বিজনেস মেন্টর ও সার্টিফাইড হ্যাপিনেস কোচ।


জন্ম বিক্রমপুর তথা মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগরে, বাবা ছিলেন শিক্ষক, মা গৃহিনী। বেড়ে উঠেছেন গ্রামের উন্মুক্ত আলো বাতাসে। তিন ভাইয়ের মধ্যে বড়। পরিবারের বড় ছেলে হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই দায়িত্বশীল মনোভাব নিয়ে বড় হয়েছেন।

স্বপ্ন দেখতে ভালবাসেন, স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিজেকে উজাড় করে দেন। মানুষের জন্য কিছু করতে পারাকেই নিজের সেরা অর্জন মনে করেন। স্রোতের বীপরীতে নিজেকে ভিন্নভাবে মেলে ধরতে পছন্দ করেন।


মানুষের জন্য কিছু করার অনুপ্রেরণা থেকেই ২০০৪ সালে কলেজ পড়ুয়া বন্ধুদের নিয়ে শুরু করেন প্রিয়স্বপ্ন গ্রুপের কার্যক্রম যার মূলমন্ত্র ছিল 'সেবার মাধ্যমে সমৃদ্ধি।' পড়াশোনার চাপে অবশ্য সেসময় বেশী দূর এগুতে পারেননি।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকেই ছুটে বেড়িয়েছেন দেশের এপ্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। খুব মনোযোগ দেন নিজেকে তৈরি করায়। অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন সেমিনার,সিম্পোজিয়াম ও প্রশিক্ষণ কর্মশালায়। এরই মাঝে ২০০৭ সালে একটু অল্প বয়সেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যান। জীবনে আসে নতুন মোড়।পারিবারিক সহযোগিতা না থাকায় একাই নিতে হয় নতুন সংসার এর দায়িত্ব।




ছোট্ট একটা কোচিং সেন্টার খুলে আয়ের ব্যবস্থা করেন। মাত্র ২২০০ টাকা আয়ের মধ্যে ১৪০০ টাকাই ছিল বাসা ভাড়া। বাকি ৮০০ টাকায় কিভাবে চলবে দুজনের পড়াশোনাসহ সারা মাসের সংসার খরচ? মাত্র ২১ বছরের একটা তরুণ এর জন্য এটা ছিল কঠিনতম এক প্রশ্ন।

প্রচন্ড গরমে মাথার উপর ঝোলানোর মত একটা ফ্যান কেনার টাকা ছিল না। বাড়িওয়ালার কাছ থেকে ধার করেছিলেন; সেই ফ্যানও বেশীক্ষণ চালিয়ে রাখলে বাড়িওয়ালা কথা শোনাত। নিজের প্রতি প্রচন্ড আত্নবিশ্বাস আর ইতিবাচক মানসিকতা দিয়ে এই পরিস্থিতি জয় করেছেন, হয়ে উঠেছেন বাস্তব জীবনের নায়ক। তাইতো অনেকে তাকে সিনেমার নয়, অনুপ্রেরণার নায়ক ডাকেন।

২০০৭ থেকে ২০১১ কাজ করেছেন দেশী বিদেশী নানা প্রতিষ্ঠানে,সমৃদ্ধ করেছেন অভিজ্ঞতার ঝুলি। ২০১১ তে নিজের গড়া প্রিয়স্বপ্ন কে নিয়ে স্বপ্নযাত্রা শুরু করেন। প্রথম দুই বছর এগিয়ে যান দারুণ গতিতে, ৩য় বছরে ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুক্ষীন হন। একে সব পার্টনাররা বিদায় নিতে থাকেন,২৭ জনের মধ্যে মাত্র ২ জন টিকে ছিল। আর্থিক সমস্যায় ছেড়ে দিতে হয় অফিস। তবুও থেমে যায়নি স্বপ্নের পথযাত্রা । পার্কের বেঞ্চে বসে, রাস্তায়,মাঠে, মসজিদের বারান্দায় বসে আঁকেন নতুন দিনের স্বপ্ন। ২০১৪ সালের প্রচন্ড কষ্টের দিনগুলির উপরেই দাড়িয়ে আছে আজকের কোচ কাঞ্চনের সকল অর্জনের ভিত্তি।


নিজের আন-হ্যাপিনেসকে জয় করতে পড়াশোনা শুরু করেন হ্যাপিনেস নিয়ে। জীবনটাকে বোঝা মনে হতো। নানা জটিলতায় আত্নহত্যা চিন্তাও উঁকি দিতো মাঝে মাঝে। এরপর ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টায় শুরু করলেন জীবন নিয়ে পড়াশোনা - এরিস্টটল থেকে কনফুসিয়াস, সক্রেটিস থেকে লাওজু, হেলেন কেলার থেকে মারভা কলিনস, মাওলানা রুমি থেকে রুডইয়ার্ড কিপলিং, জিবরান থেকে  আল্লামা ইকবাল।


হার্ভার্ড ইতিহাসের জনপ্রিয় প্রফেসর ড. টাল বেন শাহার এর তত্বাবধানে হয়ে উঠলেন বাংলাদেশের ১ম আন্তর্জাতিক সার্টিফাইড হ্যাপিনেস কোচ। আমেরিকার 'হ্যাপিনেস স্টাডিস একাডেমী' থেকে পেলেন ইন্টারন্যাশনাল কোচ ফাউন্ডেশন এক্রিডিয়েটেড হ্যাপিনেস কোচ সার্টিফিকেশন।


গত এক দশকে পজিটিভ সাইকোলজি, ওয়েলবিয়িং, স্লিপ সাইন্স, মাইন্ডফুলনেস, স্পিরিচুয়ালিটি, ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স, ব্রেইন ফিটনেস ও সিবিটিসহ বিভিন্ন ট্রেনিং ও কোচিং করে হয়েছেন ঋদ্ধ। বর্তমানে ইউএসএর সেন্টেনরী উইনিভার্সিটিতে হ্যাপিনেস স্টাডিজ নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করছেন।


ইতোমধ্যে পেয়েছেন দেশসেরা নন ফিকশন লেখকের মর্যাদা। দুইবার হয়েছেন রকমারি নাম্বার#১ বেস্টসেলার। শখ করে লেখক হয়ে ওঠা নয়, নিজের গল্প আর অভিজ্ঞতাকে অন্যের সাথে ভাগাভাগি করে নেয়ার দুঃসাহসিক প্রয়াস থেকেই লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ। পাঠক এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের অভূতপূর্ব সাড়া ও ভালোবাসায় লেখকরূপে নিয়মিত হওয়া। লিখে আনন্দ পান। সবচেয়ে তৃপ্তি অনুভব করেন যখন কেউ উদ্যম ফিরে পায় জীবনে ঘুরে দাঁড়ানোর। কোচ কাঞ্চন বিশ্বাস করেন- “ সুখ ও ভালোবাসা ভিতরে রাখতে নেই, ছড়িয়ে দিতে হয়”।  

'সুখের সমীকরণ' কোচ কাঞ্চনের ৪র্থ বই। 

অন্যান্য বই -

১। রি-স্টার্ট ইয়োর লাইফ 

২। মাস্টারিং ইয়োর লাইফ 

৩। বিজনেস ব্লুপ্রিন্ট ( নাম্বার #১ রকমারি বেস্ট সেলার)

২০২৩ এসে বদলে গেছে সবকিছু। ন্যাচারালস, গেরিলা ডিজিটাল, পার্ল, হিয়া প্রকাশনাসহ অনেকগুলো সফল প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়েছেন। ব্যবসা সম্পসারণ করছেন দেশের বাইরেও। কোচ কাঞ্চন এখন যেখানেই তাকান সম্ভাবনা ও অর্জনের আলো দেখেন।


হাজারো তরুণ উদ্যোক্তার স্বপ্নের জায়গা এখন কোচ কাঞ্চন। ১০ লক্ষ দক্ষ উদ্যোক্তা গড়ার মিশন নিয়ে কাজ করে চলছেন দুর্বার গতিতে। নিজের আর্থিক সমৃদ্ধির পাশাপশি ২ শতাধিক তরুণের কর্মসংস্থান এর ব্যবস্থা করেছেন নিজের বিভিন্ন কনসার্ন এর মাধ্যমে। এ পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক লাইফ চেঞ্জিং ট্রেনিং ও সেমিনার পরিচালনা করেছেন তরুনদের জীবনে পরিবর্তন আনতে। এক সেশনে একটানা সর্বোচ্চ ৮ ঘন্টা কথা বলে রেকর্ড ও গড়েছেন। নিজের কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন ফোরটি আনডার ফোরটি, ইকম মুভার্স এওয়ার্ডসহ ৫ টি জাতীয় পর্যায়ের সম্মাননা।


কোচ কাঞ্চন বলেন, "অনেক বেশী কাটার আঘাত সহ্য করেছি বলেই এখন যেখানে যাই আমাকে মানুষ ফুলেল ভালবাসা দিয়ে বরণ করে নেন।"

743 views0 comments

Comments


bottom of page