top of page
Writer's pictureCoach Kanchon

ব্যবসায়ের নামকরণের ১০ কৌশল

By Mohammad Zahid Hassan




নামের শান বাড়াবে আপনার ব্যবসায়ের মান


"নামে নয় গুনে পরিচয়" অথবা "বৃক্ষ তোমার নাম কি ফলে পরিচয়" এই কথা গুলো কে না জানে? যার মমার্থ - গুণ ই আসল। আর তাই কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন ই হোক কিংবা সুদর্শন ই হোক তা নিয়ে আমরা কখনো মাথা ঘামাই না। অথচ "Don't judge a book by it's cover" এর মানে বুঝেও শুধু সুন্দর নাম আর বাহারি মোড়কের আকর্ষণেই প্রতিবছর একুশের বই মেলায় হাজার হাজার বই কিনি। তাহলে বুঝা যাচ্ছে, নামকরণ এর একটা আলাদা তাৎপর্য আছে।


এটা যেমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে তেমনি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য।

এমন কি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনও তাকে তার সুন্দর সুন্দর (আসমাউল হুসনা) নামে ডাকার জন্য উৎসাহিত করেছেন।


সুন্দর নামকরণের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে সাহিত্যিক ক্যাভেন্ডিস বলেছেন, "A beautiful name is better than a lot of wealth" অর্থাৎ প্রচুর ধন সম্পদের চাইতে একটি সুন্দর নাম অনেক বেশি দামি বা উত্তম।


ব্যবসায়ের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর মধ্যে ব্যবসায়ের নামকরণ অন্যতম। মূলত নাম ই আপনার ব্যবসায়ের প্রথম ব্র্যান্ডিং করবে এবং পরোক্ষভাবে প্রচারণার খরচ কমাবে। আধুনিক যুগে গ্রাহক বা ভোক্তার মনে নামের প্রভাব অনেক বেশি। একটি সুন্দর, অর্থবহ, উপযুক্ত নাম গ্রাহকের মনে খুব সহজেই দাগ কাটতে পারে। হাজার হাজার ব্যবসায়ের মধ্যে আপনার ব্যবসায়টিকে আপনি নাম দিয়ে অন্যের থেকে আলাদা করতে পারেন, প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন।



অধিকাংশ তরুণ উদ্যোক্তা/ব্যবসায়ীগণ নামকরণের বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে দুর্ভাগ্যবশত এমন সব নাম দেন যা তাদের পণ্য এবং বাজার কৌশলকে কোনোভাবেই সমর্থন করে না।


তারা হয়তোবা ব্যবসায়ের নামকরণের সার্থকতা প্রমাণের চাইতে 'ঘটি ডোবে না, নামে তালপুকুর' প্রবাদ বাক্যের সার্থকতা প্রমাণেই বেশি আগ্রহী।



তাই হুট করে একটা নাম মাথায় আসলো, আর ভালো মন্দ বিচার না করে ঐ নামটাই রেখে দিলাম এমন যেন না হয়। প্রতিষ্ঠানের নাম ভেবেচিন্তে, সময় নিয়ে গুরুত্ব সহকারে নির্বাচন করলে তা যেমন আপনার ব্যবসায়ে শ্রীবৃদ্ধি ঘটাবে তেমনি গ্রাহকের মনে খুব সহজেই জায়গা করে নিবে। তাই এমন একটি নাম নির্বাচন করুন যেটা বছরের পর বছর আপনার প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড ভ্যালু সমুন্নত রাখবে এবং আপনার রুচিবোধেরও পরিচয় বহন করবে।


টাংস্টেন ব্র্যান্ডিংয়ের সভাপতি ফিল ডেভিস এর মতে "ব্যবসায়ের উত্থান পতনের পিছনে নামকরণের একটি বড় ভূমিকা থাকে"। কারন নাম শুনেই গ্রাহক আপনার প্রতিষ্ঠান/পণ্য সম্পর্কে কোনো না কোনো ধারণা করে নিবে। সুতরাং এমন নাম ঠিক করতে হবে যেটা শুনেই গ্রাহক প্রতিষ্ঠান এবং পণ্য সম্পর্কে একটা পজিটিভ ধারণা নিতে পারে।



তাহলে চলুন জেনে নেই নামকরণের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ১০ কৌশল:



১. ৫ থেকে ১০ এর নিয়ম:


আজকাল প্রতিষ্ঠানের নাম ৫ থেকে ১০ টি বর্ণের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। যেমন Google, Amazon, Alibaba ইত্যাদি। এ নামগুলোতে একই বর্ণ একাধিক বার এসেছে এবং ৫ থেকে ১০টি বর্ণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। তাই চেষ্টা করুন আপনার প্রতিষ্ঠানের নামটি ৫ থেকে ১০ টি বর্ণের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে, এটা আপনার প্রতিষ্ঠানের নামের সৌন্দর্য যেমন বৃদ্ধি করবে তেমনি গ্রহণযোগ্যতাও বাড়াবে।



২. অর্থপূর্ণ নাম:


আপনার প্রতিষ্ঠানের নামের একটি অর্থ থাকতে হবে। যাতে করে মানুষ সেই অর্থের মাধ্যমে আপনার প্রতিষ্ঠান এবং আপনার পণ্য বা সেবাকে চিনতে পারে। যেমন চালডাল.কম, প্রিয়বাজার.শপ এই নামগুলো থেকে খুব সহজেই তাদের কার্যক্রম বুঝা যায়।


৩. ট্রেন্ড বা ফ্যাশনের নামে নামকরণ নয়:


ফ্যাশন/ট্রেন্ড একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত জনপ্রিয়তা তুঙ্গে থাকে। তারপর ফ্যাশন যখন পরিবর্তন হয় তখন সেই নামের আর কোনো কার্যকারিতা থাকে না।

এজন্য কোন ট্রেন্ড/ফ্যাশনকে ফোকাস না করে ব্যবসায়ের নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে প্রাধান্য দিয়ে নামকরণ করলে আপনি বেশি সুবিধা পাবেন।


৪. ব্যক্তির নামে নামকরণে সতর্ক হোন:


কোন ব্যক্তির নামানুসারে যদি আপনার প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করতে চান তাহলে

খেয়াল রাখবেন, ঐ ব্যক্তির প্রভাবে আপনার প্রতিষ্ঠানের পণ্য/সেবা বিক্রয়

কতটুকু বাড়বে। তাছাড়া ওই ব্যক্তির ভবিষ্যৎ কার্যক্রম কি হবে এটা বোঝা বা অনুমান করা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কোন কারণে তার ব্যক্তি ইমেজ নষ্ট হলে তখন প্রতিষ্ঠানও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। তাই এ ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা খুব জরুরি।



৫. প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের নাম অনুকরণ না করা:


অনেকেই প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের নামকে কিছুটা পরিবর্তন করে নিজের প্রতিষ্ঠানের নাম রাখেন। যেমন বাটাকে অনুকরণ করে অনেক প্রতিষ্ঠান রাটা, রাডা, বালা ইত্যাদি নাম দিয়ে স্যান্ডেল বের করেছে । এই নামগুলো কখনোই বাটার জনপ্রিয়তাকে হার মানাতে পারবে না। কারণ নিজস্ব স্বকীয়তা ছাড়া শুধু অনুকরণ করে বাজারে কখনোই শক্ত অবস্থান গড়া যায় না। তাছাড়া একটি ইউনিক নাম খুঁজে বের করাও এক ধরনের যোগ্যতা। তা যদি আপনার না-ই থাকে তাহলে ব্যবসায় শুরু না করাই ভালো। মনে রাখবেন নাম কে কপি করা যায় কিন্তু মানুষের মেধাকে কখনোই কপি করা যায় না। তাই অন্যকে কপি না করে নিজের মেধা কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ের বিকাশ ঘটাতে মনোনিবেশ করুন।



৬. ডোমেইন এর প্রাপ্যতা নিশ্চিত করুন:


নামকরণ করার সময় অবশ্যই খেয়াল করতে হবে আপনি যে নাম ঠিক করেছেন সেই নামে আগেই কেউ ডোমেন নিয়ে রেখেছে কিনা। যদি নিয়ে থাকে তাহলে নামটি না রাখাই ভাল।

কারন এতে আপনি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন না।


৭. ট্যাগ লাইন তৈরি করুন:


আপনার ব্যবসায়ের এর নামের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ সুন্দর একটি ট্যাগ লাইন তৈরি করুন। যেটা আপনার প্রতিষ্ঠানের নামকে গ্রাহকের কাছে আরো বেশি গ্রহণযোগ্য ও অর্থবহ করে তুলবে।


৮. লোগো ডিজাইন:


প্রতিষ্ঠানের নামের সাথে সুন্দর একটি লোগো খুব সহজে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিতে পারে। তাই নামকরণ এর পর প্রতিষ্ঠানের সুন্দর একটি লোগো তৈরি করতে হবে।

1,595 views3 comments

Recent Posts

See All

3 comentários


Nazmus Sakib
Nazmus Sakib
01 de fev.

Worth reading

Curtir

Molin Roy
Molin Roy
19 de dez. de 2023

সঠিক

Curtir

emm daily Bangladesh
emm daily Bangladesh
15 de jan. de 2020

লাখো ফানুসের দখলে পুরান ঢাকার আকাশ

আরো জানতে ক্লিক করুন https://www.daily-bangladesh.com/লাখো-ফানুসের-দখলে-পুরান-ঢাকার-আকাশ/156624

Curtir
bottom of page